রবিবার, অক্টোবর ৬, ২০২৪
শিক্ষাসদর

আদর্শ শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিদায় সংবর্ধনা

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: অত্যন্ত আবেগঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে আদর্শ শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর আমলাপাড়া এলাকায় বিদ্যালয়ের হল রুমে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপুর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসি বেগম। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবক কাশেম জামাল।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা ফুলের তোড়া দিয়ে অতিথিদের বরণ করে নেন। পরে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সঞ্চালনায় শুরু হয় বক্তব্য পর্ব। প্রধান শিক্ষক হালিমা বেগম বক্তব্য দিতে আসলে অত্যন্ত আবেগঘন এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অনেককেই এসময় কান্না করতে দেখা যায়। তাদের কান্না দেখে প্রধান শিক্ষিকাসহ অতিথিদের সকলেই আবেগ তাড়িত হয়ে পড়ে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফেরদৌসী বেগম বলেন, আমি সাধারণত কোনো বিদায় অনুষ্ঠানে যাই না, কিন্তু আজ তোমাদের বিদায় অনুষ্ঠানে এসেছি। তোমরা আজ যেভাবে কাঁদাছো, তা দেখে আমি মনে হয় আর কোনো বিদায় অনুষ্ঠানে যাবো না। তোমরা গর্বিত, কেননা জেলার মধ্যে অন্যতম স্বনামধন্য একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে এই বিদ্যালয়টি।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে কাশেম জামাল বলেন, আমার বয়স এখন প্রায় ৭০ বছর। আমি দীর্ঘদিন এই স্কুলে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনেকেই এখন দেশ ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে। তারা অনেকেই আমাকে দেখলে সালাম দেয়, স্যার বলে সম্বোধন করে। আমি ভাবি আমি তো শিক্ষক নই, আমাকে স্যার বলে কেন। তখন আমি বুঝতে পারি, এরা আদর্শ শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। যারা ভালো অবস্থানে আছে, তাদের দেখে আমরা গর্ব করি। তোমরাও একদিন বড় হবে, দেশ ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে এই প্রত্যাশা করি। পাশাপাশি বাবা-মা ও শিক্ষকদের সর্বদা সম্মান করতে বলেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে আরিফ আলম দিপু বলেন, আমি জীবনে কখনোই কান্না করি নি। এমনকি, স্কুলে কোনো পড়া না পারলে শিক্ষকরা যখন বেত দিয়ে মারতো তখনও আমি হাসতাম, আর শিক্ষকরা বলতো হাসো কেন? সেই আমিও আজ তোমাদের কান্না দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। তোমরা কান্না করো না, এ স্কুল তোমাদের, তোমরা যখন খুশী আসবে, শিক্ষকদের সাথে দেখা করবে। দোয়া করি, ভালোভাবে লেখাপড়া করে তোমরা যেন ভবিষ্যতে দেশ ও সমাজ গড়তে ভুমিকা রাখতে পারো।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ.এন.এম মাহবুব আলম, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবক মোহাম্মদ আলী মন্টু।

এছাড়া, প্রধান শিক্ষক হালিমা বেগমসহ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

RSS
Follow by Email