শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Led02রাজনীতিসোনারগাঁ

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও অস্বস্তিতে কায়সার হাসনাত!

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শিল্প সমৃদ্ধ এলাকা নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসন। মহাজোটের অংশ হিসেবে গত ১০ বছর ধরে এই এলাকায় সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা। তবে, এবার নেই জোট। তাই আসনটিতে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সারকে প্রার্থী করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। কিন্তু বিভিন্ন কারণে নৌকার ভরাডুবির সম্ভাবনা রয়েছে আসনটিতে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি কারণ নিজেদের মধ্যে বিভক্তি। মুখে ঐক্যবদ্ধতার কথা বললেও বাস্তবে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।

এবার সোনরাগাঁ থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেয়েছিলো ১১জন। যার মধ্যে বেশিরভাগ নেতার রয়েছে আলাদ বলয়। অনেক সময় তারা এক কাতারে বসলেও প্রায় দেখা ও শোনা যায় দ্বন্দ্বের বার্তা। বাকবিতন্ডার ঘটনাও ঘটেছে তাদের মধ্যে। তাই নৌকার জয় আসনটিতে রয়েছে শঙ্কার মধ্যে। কেননা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নৌকাকে জয়ী করতে ঐক্যের কোন বিকল্প নেই।

এদিকে, গত ১০ বছর যাবত সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করে সোনরাগাঁ অঞ্চলকে অনেকটা নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখতে সক্ষম হয়েছেন লিয়াকত হোসেন খোকা। অনেকের মতে, এবার টানা তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য হওয়ার পথেই হাটছেন তিনি। কেননা সোনারগাঁয়ের বহু দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে তার হাত ধরেই। যার কারণে সাধারণ মানুষদের মাঝেও তার চাহিদা রয়েছে বলে জানা গেছে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দীর্ঘ ১০ বছর পর আবারও কায়সার হাসনাতকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেওয়ার পরও তাঁর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী রুবিয়া সুলতানা ও তাঁর চাচাত ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মোবারক হোসেনের ছেলে এরফান হোসেন দ্বীপসহ ১৩জন। যার মধ্যে বৈধ বলে বিবেচনা করা হয় ১১জন প্রার্থীকে, অন্য দুইজনের প্রার্থীতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক এ এইচ মাসুদ দুলালও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগের একই পরিবারের তিনজন ও অপর দুজন প্রার্থী থাকায় নির্বাচনের পুরো সুযোগ চলে যেতে পারে জাতীয় পার্টির লিয়াকত হোসেন খোকার ঘরে। এছাড়া অন্য যে আওয়ামী লীগ নেতারা দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলো তাদের সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করাতে কায়সার হাসতান কতটা সক্ষম হবে, সেই প্রশ্নও থেকে যায়।

সোনারগাঁয়ের আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরে মতে, এর আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগে কোন্দলের কারণে পরপর দুইবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন লিয়াকত হোসেন খোকা। ফলে দিনের পর দিন আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে বিভক্তি বেড়েছে।

দলীয় সুত্র মতে, নিজেদের মধ্যকার কোন্দলের কারণে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে অনৈক্য ছিল বছরের পর বছর। দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর জমকালো আয়োজনে সম্মেলন করে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করার দিনও সম্মেলন মাঠে বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নৌকার মনোনীত প্রার্থী কায়সার হাসনাত ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামের সমর্থকদের হামলায় আহত হয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সদস্য দিপক কুমার বনিক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর চৌধুরী বিরুর সমর্থকেরা। ওই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলের কারণে বারবার নৌকা দিলেও আপনারা নৌকা ডুবিয়ে অন্য কাউকে নির্বাচিত করেন।

সর্বপরি বলা যায়, ২০১৮‘র নির্বাচনের জেড় ধরে এবার পুরো দমে মাঠ কাপাবেন এইবারের নৌকার মনোনিত প্রার্থী কায়সার। সোনারগাঁয় কি এবার নতুন মুখ আসবে নাকি পুরোনো মুখই বিরাজমান থাকবে এমনটাই ভাবনা জনমনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

RSS
Follow by Email