শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Led02জেলাজুড়েফতুল্লারাজনীতি

এমন ভাবে সাজাবো যাতে কলাগাছও নৌকার প্রতীকে পাশ করে: শামীম ওসমান

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এমপি একেএম শামীম ওসমান বলেন, যার কথায় জণগন আসবে তাকে নেতৃত্ব দেয়া হবে। আগামীতে আমার জায়গায় অন্যজন নেতৃত্বে আসবেন। আর ৪ বছর পর আমি এভাবে হয়তো ফিট থাকতে পারবো না। তাই আমি এই আসনটাকে একটা সুন্দর বাগানের মতো সাজাতে চাই, যাতে এই আসনে আমাদের নেত্রী একটা কলাগাছকে নৌকার প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করতে দিলেও যাতে সে পাশ করে।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) জালকুড়ির নম পার্কের নির্বাচনোত্তর পুরর্মিলনী সভায় এ কথা বলেন তিনি।

সভায় তিনি আরও বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে নির্বাচনের দিন সকালে বিশাল মহিলা ভোটাররা ভোট দিতে গিয়েছিলো। এক এক কেন্দ্রে প্রায় ৪০০-৫০০ মহিলা গিয়েছে। কিন্তু সেখানে গেলে বলা হয় যে মোবইল নিয়ে ভিতরে ঢুকতে পারবেন না। সেই ভোটাররা ফিরে গেলেন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ আমরা বলার পর তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন। কিছু জায়গায় পুলিশ, কিছু জায়গায় প্রিজাইডিং অফিসার বললো ফোন নিয়ে ঢুকতে পারবেন না। আমি ভেবেছিলাম হয়তো ভোট ৪১-৪২ হবে কিন্তু ৩২ হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় যেমন বক্তাবলীতে প্রচারনায় তেমন যেতে পারি নাই। কিন্তু বক্তাবলী চমৎকার রেসাল্ট করেছে। ৫০ ভাগ ভোট কাস্ট করেছে। ফতুল্লায়, কুতুবপুর, কাশিপুর ভোট কাস্টিং এ নিচে আছে।

এমপি শামীম ওসমান বলেন, ধাক্কা ধাক্কি করে মঞ্চে উঠলে নেতা হওয়া যায় না। আমি সহজে মঞ্চে উঠি না। আজ এই সভার আয়োজন যে করেছে তারা ২ জন নিচে দাড়িয়ে আছে। তাদের থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। আমরা সবাই কর্মী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সৈনিক, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা প্রচলিত হই। আমাদর পর নতুন প্রজন্ম যখন আসবে তারাও যেন আমাদের মতো নিজেকে গড়ে নিতে পারে। আমি অবাক দৃষ্টিতে দেখেছি, কাশিপুরে সাইফুল্লাহ বাদল ভাই অসুস্থ থাকার পরও আমা সাথে প্রতিটা মিটিংয়ে অংশ নিয়েছেন। আমা তাকে বলেছি, বাসায় চলে যান। তাও উনি যাননি, কষ্ট করে প্রচারণায় ছিলেন। আমাকে বিদায় দিয়ে তারপর তিনি বাসায় গেছেন। মানুষ আইসিওতে তখনি যায় যখন জীবন সংকটে থাকে। আমার মতো কর্মীর জন্য নির্বাচনের দিন পর্যন্ত উনি হাসপাতালে যান নাই। নির্বাচন শেষে উনি আইসিইউতে ভর্তী হয়েছেন। আমি খবর পেয়েছি। হাসপাতালের কর্তপক্ষে সাথে কথা বলেছি যে এটা আমার আপন ভাইয়ের চাইতে কম না। যা লাগে সব কিছু করেন। আব্বা-আম্মার মৃত্যুর পর হাসপাতালের কেউকে দেখতে যাই না। আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন সময় যখন আমার আপন কেউ হাসপাতালে ভর্থী থাকেন। কারন তখন দোয়া ছাড়া কিছুই করার থাকে না। সবাই সাইফুল্লা বাদলের জন্য, খালেদ কাজল সবার জন্য দোয়া করবেন। আমি প্রতি দিন তাদের জন্য আট রাকাত নামায পড়ছি। আমরা সবাই একটা পরিবার। আমার কাছে নির্বাচনের রেসাল্ট শীট এসেছে। আমার নিম্ন ২৫-৩০ হাজার ভোট নষ্ট করা হয়েছে। ভোটার এসেছে কিন্তু ভোট দিতে দেয়া হয় নি।এখানে সবাই জড়িত না তবে কিছু জড়িত। নির্বাচনের দিন আমি কোথাও যাই নি। ৯৬ নির্বাচনেও কোথাও যাই নাই আমি আমার বাবা-মার কবরস্থানে ছিলাম। হাদিসে শুনেছি এক বসায় যদি ৪১ বার দোয়া ইয়াসিন খতম দিলে কবর আযাব মাফ হয়। আমি ১২ টায় বসেছি, ৩টায় উঠেছি। আমার বাসায় সাংবাদিক গিয়েছিলেন কিন্তু তারা কেউ বিরক্ত করেন নাই। নির্বাচনের দিন ভোট দিয়ে চলে এসেছি। এবার রেজাল্ট নিয়ে এনালইসিস করেছি। কারণ আমি নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করি। আমি আর আগামীতে নির্বাচন করবো না। তবে বাবা-মার অবর্তমানে, মুরুব্বিদের জায়গা যে নেত্রীকে দিয়েছি উনি যদি বলেন তাহলে তার বাইরে কিছু করতে পারবো না।

শামীম ওমসান বলেন, এখনো সব সমস্যার সমাধান হয় নাই। ওরা বাংলাদেশের মানুষকে না খাইয়ে মারার পরিকল্পনা করছে। বড় বড় শক্তি এবার এক জঘন্য খেলা নিয়ে মাঠে নেমেছ। আপনারা চাইলে টাকা দিয়ে জিনিস আনতে পারবেন না। একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এদিকে প্যালেস্টাইনের উপর ইসরাইলের হামলা, আবার শুনেছি ইরানেরাও হয়তো যুদ্ধে জড়াবে। এই ৩ যুদ্ধের কারনে বিশ্ব বাজারে পন্যের দাম বাড়ছে। কারন যখন তেলের বাড়ে তখন, সব কিছূতেই দাম বাড়ে। এতে আমরও এফকটেড হচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখবেন না। যা পারেন চাষ করেন। একটা বড় ক্রইসিস আসছে আমাদে দেশে। ৭৪ সালে বাংলাদেশে প্রবল দুর্বিক্ষ দেখা দিয়েছিল। নেত্রী দেশে আসার পর বাসন্দিকে খুঁজে দেখতে গিয়েছিলাম। নেন্ত্রীর মা-বাবা ভাইয়ের মৃত্যুতে দেশের কোন উন্নতি হয়েছে কিনা সেটা দেখতে। বাসন্তি একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। সে গায় জাল পেচিয়ে শুয়ে ছিলো আর তার ছবি তুলে বলা হয়েছে বাংলাদেশের মহিলাদের গায়ে কাপড় নেই। এই ধরণের খেলা হবে সামনে। আপনারা মানসিক প্রস্তুতি নেন। ভৌগলিকভাবে অনেক কিছু হচ্ছে। বার্মারা আমাদের রোহিঙ্গারা যেখানে আছে সে জায়গা দখলে নিয়ে নিচ্ছে। এগুলো সব ইন্টারনেশ্যনাল পলিটিক্সের সাথে কানেকটেড। আমরা আগামীতে ক্রাইসিস ওভারকাম করতে যাচ্ছি। নেত্রীর উপর আমাদের ভরসা আছে। আল্লাহ যদি ধৈর্য, ভালোবাসা দিয়ে কাউকে দিয়ে থাকেন তাহলে তিনি হলেন শেখ হাসিনা। ২১ বার তাকে মারতে চেয়েছিলো পারে নাই। তার উপর আল্লার রহমতের চাদর আছে। যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে তাদের সাথে সয়তান আছে। নেত্রীর জন্য দোয়া করবেন। উনাকে আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য দরকার। নির্বাচনের আগে আমি কোন সরকারি অফিসারের সাথে নির্বাচন নিয়ে কথা বলি নাই। ফ্রি ও ফেয়ার নির্বাচন করবো বলেছি।

সভায় বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. শওকত আলীর সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের এড. আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর যুবগীলের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া সাজনু, জেলা শ্রমিক লীগের আহবায়ক আব্দুল কাদির, জেলা কৃষক লীগের আহবায়ক ও সাবেক পিপি এড. ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল, নারায়ণগঞ্জ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রফেসর ড. শিরিন বেগম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপুসহ নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

RSS
Follow by Email