মঙ্গলবার, জুলাই ১, ২০২৫
Led02জেলাজুড়েবিশেষ প্রতিবেদনসোনারগাঁ

ছুটির দিনে সোনারগাঁয় দর্শনার্থীদের ভির

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সোনারগাঁয় অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের আয়োজিত মাসব্যাপী কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। ছুটির দিন হওয়ায় প্রচুর চাপ লক্ষ্য করা গেছে মেলাতে। মেলার শুরুর দিকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের চাপ কম থাকলেও ছুটির দিন পেতেই দূর-দূরান্ত থেকে মেলা প্রাঙ্গণে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা।

শুক্তবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সোনারগাঁ জাদুঘরে সরেজমিনে দেখা যায় এমনই চিত্র। অনেকেই এসেছেন পরিবার নিয়ে, অনেকেই আবার বন্ধু নিয়ে। বিভিন্ন স্টলগুলো ঘুড়ে ঘুড়ে দেখছেন দর্শনার্থীরা, আবার প্রয়োজনীয় কিছু পেলে কিনে নিচ্ছেন।

এসময় বন্ধু-বান্ধব নিয়ে কাঁচপুর থেকে মেলায় এসেছেন ইশতিয়াক আহমেদ। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এটি দেশের ঐতিহ্যবাহী একটি মেলা। তাই মেলার সাক্ষী হতে এখানে এসেছি। বর্তমানে আমার চট্টগ্রামে থাকা হয়। তাই এখন প্রতিবছর এই মেলায় আসা হয় না। আগে এখানে থাকা অবস্থায় নিয়মিত এই মেলায় আসা হতো। মেলায় আসতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে।

নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া থেকে মেলায় আসা নাইমুল ইসলাম নামের এক দর্শনার্থী জানান, অন্যসব মেলার চেয়ে এই মেলার গুরুত্ব বেশি। এই সোনারগাঁ একসময় বারো ভুইঁয়ার রাজধানী ছিল। তাই বলা যায় এটি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক একটি জায়গা। আর শুধু আমি না আমার মতো আজ প্রায় ১০ হাজার মানুষ এখানে এসেছেন। গ্রাম্য পরিবেশে সুন্দর সুন্দর জিনিসপত্র ক্রয় করার সুযোগ অন্যসব মেলাতে হয় না। প্রত্যেক বছর দুই থেকে তিনবার আমার এই মেলায় আসা হয়। এখানে যতোবারই আসি ততোই প্রশান্তি লাগে।

মোশারফ হোসেন স্কুল এন্ড কলেজে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করে আসছেন বিথী রানী ভৌমিক। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, নানান ব্যস্ততার কারণে সপ্তাহের অন্যান্য দিন অবসর থাকা হয় না। আজ ছুটির দিন হওয়ায় ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। শুধু বিনোদনের জন্যই নয় এই মেলায় এসে গ্রাম বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্যের সঙ্গে ছেলে-মেয়েকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আমার এখানে আসা বলেন তিনি।

মেলার বিষয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে উপ-পরিচালক একেএম আজাদ সরকার বলেন, দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে আয়োজিত মাসব্যাপী এ লোক কারুশিল্প মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনী, লোকজীবন প্রদর্শন, পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বাহারী পণ্য সামগ্রীর প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিদিন লোকজ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলা, কর্মরত কারুশিল্পীর কারুপন্যের প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই মেলা ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। আশা করছি, এবারের মেলায় ৩ লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে।

উল্লেখ্য, এবারের মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীর ৩২টি স্টলসহ ১০০টি স্টাল বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রথিতদশা ৬৪ জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে মেলায় অংশ নেবেন। এ বছর মৌলভীবাজার ও ঝালকাঠীর শীতল পাটি, মাগুরার শোলাশিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি ও মাটির পুতুল, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁ, টাঙ্গাইল ও ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশ বেতের কারুশিল্প, ঐতিহ্যবাহী জামদানি, কাঠের চিত্রিত হাতি-ঘোড়া পুতুল, বন্দরের রিকশা পেইটিং, কুমিল্লার তামা-কাঁসা-পিতলের কারুশিল্প, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুশিল্প, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা পুতুল, বগুড়ার লোকজ খেলনা ও কুমিল্লার লোকজ বাদ্যযন্ত্রের শিল্পীসহ ১৭ জেলার কারুশিল্পীগণ মেলায় অংশ নিবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

RSS
Follow by Email