দিনব্যাপি বন্দরে উন্নয়ন মূলক কাজের উদ্বোধন করলেন এমপি সেলিম ওসমান
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের অর্থায়নে বন্দরের ধামগড় ও মদনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের উদ্বোধন করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকাল অব্দি তার সহধর্মীনি নাসরিন ওসমানকে সাথে নিয়ে দুটি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ওই কাজের উদ্বোধন করেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মো. আশরাফুল মমিন খান, বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ রশিদ, ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহম্মেদ, ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সালাম, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাকসুদ হোসেন, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন প্রমুখ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল বলেন, আমি শ্রদ্ধা জানাই আমাদের প্রয়াত নেতা জোহা চাচাকে ও মহয়সী নারী নাগিনা জোহা চাচিকে। আমি ধন্যবাদ জানাই এমপি সেলিম ভাইকে, তিনি এমন প্রত্যন্ত একটা অঞ্চলে এসে স্কুল তৈরী করেছে। সত্যি এমন কাজ প্রশংসার দাবি তুলে। আমার বিশ্বাস এই অঞ্চলের মানুষ তাদের শিক্ষার মান আরও উন্নত করবে। আজকে জেলা পরিষদ থেকে সামান্য কিছু সেলিম ভাইয়ের পরামর্শে বরাদ্দ করতে পেরেছি। জেলা পরিষদের নামে বদনাম আছে, আমি আশা করি এসব কাজের মাধ্যমে আমরা সেই বদনাম মোচন করতে পারবো।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেন, আমরা চলে যাওয়ার রাস্তায় আছি এখন, কিন্তু আমরা যদি চলে যাই তাহলে হালটা কে ধরবে। আমার ৫জন চেয়ারম্যান আছে, আমি জানিনা ওদরে আমার ছোট ভাই বলবো নাকি আমার সন্তান বলবো। আজকে উন্নয়ণের জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দনের কাছে টাকা চাইলাম, সে আমাকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু এর আগেও ২জন চেয়ারম্যান ছিলো, বরাদ্দও হয়েছিলো কিন্তু সম্পূর্ণ টাকা চুরি করা হয়েছে। সময় কথা বললে এই টাকা কোথায় গেলো।
তিনি বলেন, যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে চলবেন তারাই আমার সঙ্গে থাকবেন। একুশ বছর বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের জীবন সার্থক। আমরা লড়াই করে দেশ স্বাধীন করতে পেরেছি। কে কোন দল করি, এটা বিষয় না। যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে চলবেন তারাই আমার সঙ্গে থাকবেন। একুশ বছর বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের সঙ্গীদের নিয়ে গুম করা হয়েছিল। চন্দনের মতো মানুষ, চাষাঢ়ায় বোমা হামলায় দুটি পা হারিয়েছেন। তবুও তার সাধ্যমতো তিনি সবার জন্য করে যাচ্ছেন।
শিক্ষার অগ্রগতি ও বাল্য বিবাহ নিয়ে সেলিম ওসমান বলেন, স্কুলের শিক্ষকদের নির্দেশ দিচ্ছি আপনারা সবাই প্রতিটা শিক্ষার্থীর গার্ডিয়ানের নাম্বার রাখবেন। তাদের আপডেট করবেন কখন সে স্কুলে আসছে নাকি আসে নাই। যদি এটা কোন স্কুলের সভাপতি না পারে তাহলে বলবো দয়া করে সভাপতির পদটা ছেড়ে দেন। আমরা সুশিক্ষিত সভাপতি চাই।
তিনি বলেন, আমি গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। গার্মেন্টস ব্যবসা করে আমি দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমি কৃষিকাজ করে মাসে পঞ্চাশ লাখ টাকা কামাই করতে পারি। আমি শাক লাগাই, মাছ চাষ করি। আমরা চাই দেশের প্রতি ফুট জমিতে চাষাবাদ করা হোক। এতে করে দেশের চাহিদা পূরণ করে আমরা বিদেশে আরও পণ্য পাঠাতে পারবো।
সেলিম ওসমান বলেন, আমরা অনেক কাজ করি কিন্তু অন্যরা ক্রেডিট টা নিয়ে নেয়। গতকাল এসপি অফিসে একটা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন করা হয়েছে। সেটা নির্মাণ করেছে আমাদের নারায়ণগঞ্জের জেলা পরিষদ, কিন্তু কোন পত্রিকায় কেউ ঘোষণা করেন নাই এই ফান্ড টা কোথা থেকে আসলো কে দিলো। যারা এগিয়ে আসতে চায় তাদের যদি মূল্যায়ন করা না হয় তাহলে সেই মানুষটা কষ্ট পায়। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল করলো জেলা পরিষদ, আসলো আমাদের দেশের একজন মন্ত্রী, স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু উনি জানলো না এটা কে ফান্ড দিলো, কোথা থেকে আসলো একটা ধন্যবাদ দিতে পারতেন কিন্তু পারলেন না।
নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করলে সাংবাদিকদের সেলিম ওসমান বলেন, যে কয়টা দল অংশগ্রহণ করবে সে কয়টা দল নিয়েই আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে। নির্বাচনকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারও আর হবে না। দেশের মানুষের ক্ষতিও হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসলে দেশ আরও এগিয়ে যাবে। তাই আগামীতে তাকে আবারও ক্ষমতায় আনার জন্য আমাদের বঙ্গবন্ধু সৈনিকদের কাজ করতে হবে।
খেলাধুলা প্রসঙ্গে এমপি সেলিম ওসমান বলেন, আজকে খেলা দেখলাম বন্দরে কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছিলো এরা বাংলার টাইগার। তবে এই টাইগার গুলোর ট্রেনিং এর দরকার আছে। খেলার মাঠে কোন রাজনীতি থাকবে না। নভেম্বরের মধ্যে আপনারা খেলার আয়োজন করেন আমার পক্ষ থেকে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকবে, আর যদি মেয়েদের খেলার ব্যবস্থা করা হয়, যেখানে শুধু মেয়েরা খেলবে, তাহলে আরও ১০লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে।