নগরীতে জেঁকে বসেছে হাড়কাঁপানো শীত
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: এবার ইট পাথরের নগরীতে জেকে বসেছে শীত। অন্য বছরগুলোতে জেলার গ্রাম্য অঞ্চলে শীত থাকলেও নগরীতে এর প্রভাব খুব বেশি লক্ষ্য করা যায় না। তবে এবার নগরীতের দিনের বেলা সূর্যের দেখা মেলে না। দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসায় হাত-পা জমে যাওয়ার মত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (১৩ জানুয়ারী) সকাল থেকে ঘন কুয়াশার কারণে একবারের জন্যও দেখা যায়নি সূর্য্য। বিগত ৪-৫ দিন ধরে এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছে জেলার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র শীত উপেক্ষা করে শ্রমজীবীরা পথে নামলেও আয়হীন হয়ে পড়েছে তারা। এ দিকে যারা বাধ্য হয়ে ঘরে থেকে বের হয়েছেন, তারাও গরম চা খেয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। অনেকে আবার এলাকার অলিগলিতে কাগজ জমিয়ে আগুন দিয়ে তাপ পোহাচ্ছেন।
ঘন কুয়াশার চাদরে মুড়ি দিয়ে আছে গোটা পুরো জেলা। কমছে দিনের তাপমাত্রা। আবহাওয়ার ওয়েবসাইটগুলোর তথ্য অনুযায়ী সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এভাবেই দ্রুত কমছে তাপমাত্রা। আর এভাবেই শীতল থেকে শীতলতম হচ্ছে এখনকার আবহাওয়া। সাধারণত দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রিতে নামেলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। এছাড়া ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
নগরীর রিকশা শ্রমিক লুৎফর হোসেন বলেন, সকাল ৭টায় রিকশা লইয়া বাইরাইছি। সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনো ট্রিপ পাইনাই। ঠান্ডার জন্য চায়োর দোকানে বসে চাও খাইছি তাও শরীরের কাঁপুনি ছাড়ে না।
উকিলপাড়ায় কাজে আসা বৃদ্ধ সোবাহান হাওলাদার বলেন, এ বছরের এটাই সবচেয়ে বেশি শীত। বাধ্য হয়ে কাজে নেমেছি। মনে হয় শরীর বরফ হয়ে গেছে।
এদিকে হঠাৎ করে আবারও শীতের প্রকোপ বাড়ায় কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। শীত যতই বাড়ছে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ততই বাড়ছে। শিশু ও বয়স্করাই অন্যদের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এই শীতে নিজ নিজ স্থান অনুযায়ী স্বাস্থ্যের বাড়তি খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।