শুক্রবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৪
Led02শিক্ষা

নবীগঞ্জ গার্লস স্কুলে বকেয়া না দেয়ায় নির্বাচনি পরীক্ষা আটকে দেয়ার অভিযোগ

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বন্দরে বকেয়া বেতন পরিশোধ না করায় শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা আটকে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। রবিবার (১৫ অক্টোবর) নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজে ওই ঘটনা ঘটে। পরীক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেয়ায় অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

একাধিক অভিবাবক জানান, নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের ১০ম শ্রেনীর ছাত্রীদের এসএসসি পরীক্ষার প্রাক নির্বাচনী পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ চলতি অক্টোবর, আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের বেতন এবং কোচিংয়ের জন্য অগ্রীম ৩ হাজার টাকা দাবি করে। যারা এ টাকা পরিশোধ করতে পারেনি সে সকল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার হল থেকে অপমান করে হাত থেকে পরীক্ষার খাতা ও প্রশ্নপত্র রেখে হল থেকে বাইরে বের করে দেয়। খবর পেয়ে অভিভাবকরা এসে স্কুলের সামনে জড়ো হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মাহফুজুল নামে এক অভিভাবক অবিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেয়ের বিনামূলে শিক্ষার ঘোষণা দিয়েছেন। মেয়েদের কোন বেতন দিতে হবে না। তারপরেও নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতিটি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন আদায় করে থাকেন। স্কুলে কোচিং করানো নিষিদ্ধ থাকলেও তারা কোচিংয়ের নামে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাদের চাহিদা মত টাকা দিতে না পারায় আমার মেয়েকে পরীক্ষার হল থেকে অপমান করে বের করে দেয়।

আরেক অভিভাবক মাধবী জানান, দেশে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির কারনে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারউপর স্কুলের দাবিকৃত অতিরিক্ত টাকা দিতে না পারায় আমার মেয়েকে পরীক্ষার হল থেকে প্রশ্নপত্র ও খাতা রেখে বের করে দেয়। একই অভিযোগ করেন শামীমা ও জাহাঙ্গীর আলম নামে দুই অভিবাবক।

নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইউনুছ ফারুকী লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, আমরা খবর পেয়েছি। আমরা ওই প্রধান শিক্ষককে কল দিয়েছিলাম। ওনি আমাদের কল ধরেনি। আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলেছি, আগামীকাল ওই স্কুলে গিয়ে এই ঘটনার বিষয়ে খতিয়ে দেখার জন্য। তবে আমি যতটুকু শুনেছি, টিউশন ফি আদায়ের পলিসি হিসেবে তাঁরা এই কাজটা করেছে, যদিও তারা এটা করতে পারে না। যেহেতু এটা গুরুত্বপূর্ণ একটা পরিক্ষা। এই পরীক্ষার সাথে টিউশন ফি বা অন্যান্য ফি’র শর্ত জুড়ে দেয়া সম্পূর্ণ বেআইনী। আমরা সত্যতা জানার চেষ্টা করছি, তারপর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হবে।

নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজে প্রধান শিক্ষক সায়মা খানম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার টাকা পরিশোধের জন্য নোটিশ দিয়েছে। কারণ বকেয়া পরিশোধ না করলে তো শিক্ষকদের বেতন দেয়া সম্ভব না। কিন্তু শিক্ষার্থীরা টাকা নিয়ে আসে নাই। তাই শিক্ষকরা রাগ করে তাদের পরীক্ষা দিতে দেয়নি। পরে অনেক অভিবাবকরা আমার কাছে আসছিলো আমার কাছে অভিযোগ করেন। পরে আমি স্যারদের বুঝিয়েছি পরীক্ষা দিতে দেয়ার জন্য। আমি অভিবাবকদের বলেছি আপনারা বেতন না দিয়ে কিভাবে স্যারদের বেতন দেই বলেন। পরে বললাম আপনারা বকেয়া দিয়ে দিয়েন, আর পরীক্ষা দিতে বলে দিচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের স্কুলে ১১শ’ শিক্ষার্থীল মধ্যে ৮শ বাচ্চা হাফ ফ্রী-ফুল ফ্রী। এর মধ্যে ফুল ফ্রী আছে ২০০জন। কমপক্ষে ৩শ’ থেকে ৪শ’ বাচ্চা বেতন দেয়। তাই অভিবাবকদের বললাম, আপনার যদি টাকা না দেন তাহলে কিভাবে চলবে।

অভিযোগ করে প্রধান শিক্ষক সায়মা কানন বলেন, এক সাংবাদিক আমাদের স্কুলে শিক্ষকতার জন্য বলেছিলো, আমরা তাকে নিয়োগ দেইনি। তাই তিনি মন ক্ষুন্ন হয়েছেন। এই জন্য আমাকে অসম্মান করার জন্য এইন কাজ করছে।

এ ব্যপারে স্কুলের সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল বলেন, আমি বিষয়টি জানার পর শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করেছি। আমি প্রধান শিক্ষকে এ কান্ড করায় চাপ প্রয়োগ করেছি সে অভিভাবকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের ব্যবস্থা করেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

RSS
Follow by Email