নারায়ণগঞ্জ বায়ু দূষণের শীর্ষে
লাইভ নারাযণগঞ্জ: বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার উপস্থিতি বিবেচনায় দেশে বায়ু দূষণের শীর্ষে রয়েছে গাজীপুর, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা। এ ছাড়া ঢাকা শহরের মধ্যে দূষণের শীর্ষে রয়েছে শাহবাগ।
শনিবার (৫ আগস্ট) ‘বায়ুমান উন্নয়ন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারের’ দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ উপাত্ত তুলে ধরা হয়। বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এতে জানানো হয়, বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) ৬৪ জেলার বায়ুমান বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে। গবেষণা থেকে দেখা যায়, ২০২১ সালে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার গড় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা প্রতি ঘনমিটারে ১০৫.৫৮ মাইক্রোগ্রাম ছিল, যা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার দৈনিক আদর্শ মান (প্রতি ঘনমিটারে ৬৫ মাইক্রোগ্রাম) থেকে প্রায় ১.৬২ গুণ বেশি। এতে দেখা গেছে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার উপস্থিতি ক্রমে শিল্প অধ্যুষিত ৩টি জেলা গাজীপুর, ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জ দূষণের শীর্ষে অবস্থান করছে। গবেষণার আরও দেখা যায়, ৬৪ জেলার মধ্যে ৫৪টি জেলার বায়ুমানই জাতীয় নির্ধারিত দৈনিক মানমাত্রায় ৬৫ মাইক্রোগ্রামের চেয়ে খারাপ।
এদিকে ঢাকার ১০ স্থানের বায়ুমান গবেষণা করে ক্যাপস জানিয়েছে, ১০টি স্থানের মধ্যে শাহবাগ এলাকায় সবচেয়ে বেশি বস্তুকণা ছিল। সেখানে বার্ষিক গড় বস্তুকণার উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ৯১.৪ মাইক্রোগ্রাম অর্থাৎ আদর্শমান ১৫ মাইক্রোগ্রামের চেয়ে প্রায় ৬ গুণ বেশি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সার্বিক বিবেচনায় রাজধানী ঢাকা ও দেশের বায়ুমান খুব একটা সন্তোষজনক অবস্থায় নেই। এ অবস্থায় দেশের বায়ুমান উন্নয়নে নবায়নযোগ্য শক্তি একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে।
এতে চারটি সুপারিশও তুলে ধরে বলা হয়। এগুলো গ্রহণ করলে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ হবে। সুপারিশগুলো হচ্ছে–নতুন প্রণীত বায়ু দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০২২ এ মান প্রতিঘনমিটারে ১৫ মাইক্রোগ্রাম বজায় রাখা। তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে ইমিশনের মান মাত্রা বজায় রাখতে হবে। ডিজেলের সালফারের উপস্থিতির সর্বোচ্চ সীমা ৫০ পিপিএম নির্ধারণ করা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা- ২০২৩ এ সকল কয়লা, তেল ও গ্যাস ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্লান্টকে পূর্বের মতো (পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা-১৯৯৭) লাল শ্রেণীভুক্ত রাখা। কপ২৬ এর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ ভাগ ক্লিন এনার্জি বা
নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তা ছিলেন বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। এ ছাড়া আরও আলোচনা করেন ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের টেকনিক্যাল কোঅর্ডিনেটর ডমিনিক সেন্টু গমেজ, সেন্টার ফর গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিজিইড) নির্বাহী পরিচালক আব্দুল ওয়াহাব এবং ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান প্রমুখ।