শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
ক্রীড়াজেলাজুড়েবিনোদন

না.গঞ্জের ছেলেদের হাত ধরে ঘরে এলো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়াকাপ

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সেমি-ফাইনালে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করা ভারত আর পাকিস্তানকে হারিয়েই স্বপ্নটা জোড়ালো হয়। এশিয়াকাপে এর আগের নয় আসরের আটটিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। এরমধ্যে একবার পাকিস্তানের সঙ্গে শিরোপা ভাগাভাগি করে তারা। অপর একটিতে চ্যাম্পিয়ন আফগানিস্তান। অন্যদিকে এই আসরে আটবার খেললেও তেমন কোনো সাফল্য ছিল না বাংলাদেশের। কিন্তু এবার নারাণয়গঞ্জের ছেলের এবং নারায়ণগঞ্জ কলেজের ছাত্র মাহফুজুর রহমান রাব্বি নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়াকাপ ঘড়ে আসে। এই জয়ের আরেক সদস্য ছিলো নারায়ণগঞ্জ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র জিসান আলম।

স্বপ্নের ডানা মেলা সেই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় রবিবার (১৭ ডিসেম্বর)। দুবাইতে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৮২ রান করে যুব টাইগাররা। জবাবে ১৫১ বল বাকি থাকতে মাত্র ৮৭ রানে গুটিয়ে যায় আমিরাত।

বাংলাদেশের জয়ের নায়ক ছিলেন দারুণ ছন্দে থাকা ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলি। করেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। তার সঙ্গে জ্বলে ওঠে চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আরিফুল ইসলামের ব্যাটও। দুইজনই পেয়েছেন ফিফটি। তাতে আমিরাতকে বড় লক্ষ্যই ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। এরপর বল হাতে তিন পেসার মারুফ মৃধা, রহনত দৌল্লা বর্ষণ ও ইকবাল হোসেন ইমনের তোপে একশ রানও করতে পারেনি স্বাগতিকরা।

২৮৩ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে এদিন শুরু থেকেই দুর্দান্ত বোলিং করেন বাংলাদেশের পেসাররা। এদিনও শুরুতে গর্জে ওঠেন আরিফ। আমিরাতের দুই ওপেনারকেই ছাঁটাই করেন এই পেসার। এরপর মঞ্চে আসেন বর্ষণ। মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিয়ে টানা তিনটি উইকেট তুলে নেন তিনি। ফলে ৫০ রানের আগেই আমিরাতের অর্ধেক ব্যাটার সাজঘরে। এরপর ইমনও তুলে নেন দুটি উইকেট। তখন বাংলাদেশের জয় ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার।

কিন্তু বাংলাদেশের অপেক্ষা বাড়াতে থাকেন ধ্রুব পারাশার। এক প্রান্ত আগলে রেখে যুব টাইগারদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিতে থাকেন এই ব্যাটার। তিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেও অপর প্রান্তে ঠিকই উইকেট তুলে নিতে থাকেন যুব টাইগাররা। স্পিনার শেখ পারভেজ জীবন ২টি উইকেট তুলে লেজ ছাঁটাইয়ের কাজ করেন। আরিফও বোলিংয়ে ফিরে তুলে নেন নিজের তৃতীয় শিকার। তাতে বিশাল জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।

আরব আমিরাতের স্রেফ দুই ব্যাটার ছুঁতে পেরেছেন দুই অঙ্ক। ৪০ বলে ২টি চারের সাহায্যে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন ধ্রুব। এছাড়া ১১ রান করেছেন আকশাত রায়। বাংলাদেশের হয়ে ৭ ওভার বল করে ২৯ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন আরিফ। ৬ ওভার বল করেন ২৬ রানের বিনিময়ে ৩টি শিকার বর্ষণেরও। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন ইমন ও জীবন।

আরব আমিরাতের স্রেফ দুই ব্যাটার ছুঁতে পেরেছেন দুই অঙ্ক। ৪০ বলে ২টি চারের সাহায্যে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন ধ্রুব। এছাড়া ১১ রান করেছেন আকশাত রায়। বাংলাদেশের হয়ে ৭ ওভার বল করে ২৯ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন আরিফ। ৬ ওভার বল করেন ২৬ রানের বিনিময়ে ৩টি শিকার বর্ষণেরও। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন ইমন ও জীবন।

এর আগে এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৩ রানেই ওপেনার জিশান আলমকে হারায় বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় উইকেটে চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ানকে নিয়ে দারুণ প্রতিরোধ গড়েন আরেক ওপেনার শিবলি। ১২৫ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন এ দুই ব্যাটার। এরপর রিজওয়ান ফিরে গেলে আরিফুল ইসলামের সঙ্গে ৮৬ রানের আরও একটি দারুণ জুটি গড়েন শিবলি। তাতেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় বাংলাদেশ।

ওপেনিংয়ে নামা শিবলি টিকে ছিলেন প্রায় শেষ পর্যন্ত। ইনিংস শেষ হওয়ার এক বল আগে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার। একপ্রান্ত আগলে রেখে তার ব্যাট থেকে আসে ১২৯ রান। ১৪৯ বল মোকাবিলায় তিনি ১২ চারের সঙ্গে মারেন ১ ছক্কা। এর আগে গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। দুটি ফিফটিও করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে তিনি এবারের আসর শেষ করেছেন ৫ ম্যাচে ৩৭৮ রান নিয়ে। তার ধারেকাছে নেই আর কেউ। এখন পর্যন্ত আড়াইশ রানও আসেনি আর কোনো ব্যাটারের কাছ থেকে।

৭৮ বলে হাফসেঞ্চুরিতে পৌঁছানো শিবলি তিন অঙ্কে পৌঁছান ১২৯ বলে। ৭১ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬০ রান করেন রিজওয়ান। আরিফুলের ব্যাট থেকে আসে ৪০ বলে ৫০ রানের আগ্রাসী ইনিংস। শেষদিকে অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি খেলেন ১১ বলে ২১ রানের ক্যামিও। আমিরাতের হয়ে আয়মান আহমেদ ৪ উইকেট নেন ৫২ রানে। যার তিনটিই তিনি শিকার করেন বাংলাদেশের ইনিংসের শেষ ওভারে। ওমিদ রেহমান ৪১ রানে পান ২টি উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

RSS
Follow by Email