শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Dis_leadLed01রাজনীতি

না.গঞ্জ জেলা বিএনপি পর্যবেক্ষণে, আসছে ১৫১ সদস্যের কমিটি

# হুট করে কমিটি দিলে তো হবে না: কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম
# যতদ্রুত কমিটি হবে ততই আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা সহায়ক হবে: গিয়াসউদ্দিন
# বিএনপির নেতাকর্মীরা পদ পদবী নিয়া বেশী চিন্তিত না: রাজিব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত ছিলো ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগের অধিনে কোন নির্বাচনে যাবেন না জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। কিন্তু সেই নিয়ম অমান্য করে নির্বাচন করেছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার। এতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি শীর্ষ অবস্থান থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। তৈমূরের পরে দায়িত্ব পালন করেছেন অনেকেই কিন্তু দলকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে হিমশিম খেয়েছে। পরিশেষে দায়িত্ব বর্তায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিনের উপর। নেতাকর্মীদের একত্রিত করে সম্মেলনেও করলেন তিনি। নতুন কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামও ঘোষণা হয়। এর পর প্রায় চার মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে ব্যর্থ নতুন নেতৃত্ব। এমন সমালোচনায় জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বলছেন,‘ আন্দোলন সংগ্রাম চলমান থাকায় কিছুটা সময় লাগছে’। আর কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, ‘পর্যবেক্ষণ করছি, হুট করে কমিটি দিলেই হবে না’।

এদিকে, জেলার তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের অভিযোগ, সামনে অনেক বড় ঝড় আসবে। সঠিক নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা খুব প্রয়োজন। কমিটি না হওয়াতে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের থেকে ফিরে আসতে হবে। যে দুজন নেতৃত্বে আছে তাদের একার পক্ষে পুরো জেলা কভার করা সম্ভব না। তাই আন্দোলন সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়া খুব জরুরী।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির একাধিক নেতা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যত কোন অনুমোদিত কমিটি নাই। ১৭ জুন শুধু দুইজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। যতদ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হতো, ততই ভালো হতো। না থাকার কারণে দল আস্তে আস্তে দূর্বল হয়ে যাচ্ছে। কারণ পদ প্রত্যাশি নেতাকর্মীরা দিনে দিনে হতাশ হচ্ছে, এটা বিএনপির জন্য ক্ষতিকর। আমাদের হাতে খুব কম সময় আছে। যেহেতু চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, তাই কমিটি থাকাটা খুব জরুরী। কারণ কেউ কমিটিতে থাকলেই তাকে জবাবদীহিতার জায়গা থাকবে। যার প্রতিক্রিয়াটা পড়বে আন্দোলন সংগ্রামে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি পূর্ণাঙ্গ কমিটি কাজ প্রায় শেষ। আমার মনে হয় খুব শীঘ্রই কমিটি ঘোষণা করা হবে। আমাদের দলের চেয়ারপার্সন অসুস্থ উনাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার যে চেষ্টা সেটা আমরা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার যে চেষ্টা আমরা করছি, এই আন্দোলনের সফলতার শীর্ষে পৌছে দেয়াই আমাদের আন্দোলনের মূখ্য কাজ। এ ছাড়া কমিটি যেহেতু নাই, সেই ক্ষেত্রে একটা প্রভাব তো পড়ার সম্ভবনা থাকেই। আশা করি খুব শীঘ্রই একটা পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, আমাদের জেলা বিএনপির সম্মেলন যখন হয়, তখনও আমরা আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম চলমান রেখেছি। সম্মেলনের পরদিনই থেকেই কিন্তু আমাদের আন্দোলনের কর্মসূচি শুরু করতে হয়। আমাদের আন্দোলন সংগ্রামের কারণেই বেশ সময় লেগেছে কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রস্তাব পাঠাতে। আমি এবং আমার সাধারণ সম্পাদক মিলে কেন্দ্রে একটি খসড়া দাখিল করেছি। আশা করি খুব দ্রুত কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা যাচাই বাছাই করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবে।

তিনি আরও বলেন, নেতৃবৃন্দ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে উপলব্ধি করতেছে, যতদ্রুত পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি করে দেয়া হবে, ততই আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা সহায়ক হবে। আমরা লক্ষ্য করতেছি নেতাকর্মীদের মধ্যে এটার প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। কারণ আমি দায়িত্ব নেয়ার পর দেখেছি, বহুমত বহুপদ ছিলো, আমি চেষ্টা করেছি ব্যাক্তিগতভাবে তাদের সাথে কথা বলে একত্রিত করার জন্য। আমার নেতৃবৃন্দ আমাদের যথেষ্ট ভাবে সাহায্য করেছে। এর মাধ্যমেই একটা ঐক্যের বন্ধন তৈরী হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে কথা বলে দ্রুত কমিটিটা করার জন্য। নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভালো ধরণের একটা কমিটি হবে আশা করি।

গিয়াসউদ্দিনে আরও বলেন, আমরা কেন্দ্রে প্রস্তাবনা রেখেছি, আসলে কেমন নেতাকর্মীদের রাখলে কমিটি আরও শক্তিশালী হবে। ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল থেকে উঠে আসা নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। নবীন প্রবীনের একটা সংমিশ্রণ রেখে, যারা ফিল্ডে কাজ করে তাদের নিয়ে যাতে হয় কমিটি। আমরা নাম সাজেস্ট করেছি, আইডিয়া দিয়েছি, বাকিটা কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা যাচাই বাছাই করে দিবে। এবারই আমরা এমন একটা কমিটি করতে যাচ্ছি, যেখানে নেতাকর্মীরা যথাযথ মূল্যয়ন পায়। দল কারো ব্যাক্তির না, তাই যথাযথ যাতে নেতৃবৃন্দ মূল্যয়ন পায় সেই চেষ্টা করছি।

পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, নারায়ণগঞ্জের কমিটি নিয়ে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। কারণ এখন হুট করেই কমিটি দিলেই তো হবে না। এখন তো অনেক নেতাকর্মী প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারী হয়ে যাচ্ছে; যাদের কর্মী হওয়ারও যোগ্যতা নাই। আমরা ১৫১ সদস্য বিশিষ্টি কমিটি করতে বলেছি, এটা যদিও একটু টাফ। তবে আমরা যে কোন সময় কমিটি ঘোষণা করে দিতে পারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

RSS
Follow by Email