বন্দরে দুই ঘরে ঝুলছিল স্বামী-স্ত্রীর লাশ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: স্ত্রী আত্মহত্যা করায় খবর শুনে স্বামীও আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের র্যালী আবাসিক এলাকায় সোমবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পারিবারিক কলহের জের ধরে আত্মহত্যা বলে প্রাথমিক ভাবে ধরণা করছে পুলিশ।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকাল (রিপোর্ট) পর্যন্ত অপমৃত্যুর মামলার প্রস্তুতি চলছিল।
নিহতরা হলেন-পুরান বন্দর চৌধুরী বাড়ি এলাকার আবুল হোসেনের সৌদি ফেরত ছেলে কাউসার (৩২) ও তাঁর স্ত্রী শরীয়তপুর জেলার চর আন্দির চর চান্দের বাজার এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে ঝর্ণা আক্তার (১৮)।
ঝর্ণা তার ভাই রায়হানের ভাড়া বাসায় বন্দরের র্যালী আবাসিক এলাকার হুমায়ুন আজাদ মিয়ার বাড়িতে থেকেই বন্দর গার্লস স্কুলে ৯ শ্রেনীতে পড়তো।
মেয়ের স্বজনদের সূত্র জানায়, কাউসার এর আগে একটি বিয়ে করে ছিল। সে সংসারে তার ৮ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি সে বিদেশে থাকা অবস্থায় ঝর্ণার সাথে ফেইসবুকে পরিচয় ঘটে। তখন থেকেই তাদের মধ্যে প্রেম ভালোবাসা সম্পর্ক শুরু হয়। কাউসার নিজেকে অবিবাহিত হিসেবে মেয়ের কাছে উপস্থাপন করেন। দেশে আসার পর উভয়ের মধ্যে একাধিকবার দেখা সাক্ষাৎ হয়। বিষয়টি কাওসারের প্রথম স্ত্রী-সহ ঝর্ণার পরিবারের মাঝে জানাজানি হলে উভয় পরিবার তাদের সম্পর্ক আপত্তি করে। এ নিয়ে কাওসারের প্রথম স্ত্রী মামলা দায়ের করলে ওই মামলায় বেশ কিছু দিন জেল খাটে কাওসার। জেল থেকে বের হয়ে সকল বাঁধা উপেক্ষা করে ঝর্ণার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক বজায় রাখা। এমনকি এক পর্যায়ে প্রায় মাস খানেক পূর্বে সকলের অজান্তে তাঁরা অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়।
এ ঘটনায় ঝর্ণার পরিবারের পক্ষ থেকে কাউসারের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় কাওসার প্রায় ১৪ দিন জেল খেটে বের হলে ঝর্ণার পরিবারের সঙ্গে কাউসারের পরিবারের সমঝোতা হয়। তারা উভয়ই সামাজিক ভাবে বিয়ে করেন।
১৬ অক্টোবর সোমবার রাত আনুমানিক ৯ টায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে এক পর্যায় ঝর্ণা ঘরের দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা করে। কাওসার দরজায় বার বার ধাক্কা দিলেও অপর প্রান্ত থেকে দরজা না খোলায় বিষয়টি আচ করতে পারে কাউসার। পাশের রুমে থাকা ওড়না গলায় প্যাচিয়ে ফ্যানের হুকের সঙ্গে বেঁধে আত্মহত্যা করে সেও।
খবর পেয়ে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু বকর সিদ্দিক, বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রেজাউল করিম ঘটনাস্থলে যান।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু বকর সিদ্দিক লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করছি পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এখন অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।